Bismillahir-Rahmanir-Rahim
   
  Welcome to Jamy's Website....
  ভালবাসার গল্প
 

কি বলব? কিছুই না..........

 

"আরি !মেয়েটা নিজের প্রফাইল পিকচার দিছে !

 

ওয়াও !"

 

কমেন্ট করলাম ।

 

"NICE"

 

৫ মিনিট পর দেখলাম notification আসছে একটা . . চেক করলাম ।

 

মেয়েটা কমেন্ট করেছে ।

 

"thanks"

 

একটা স্মাইল সিমবোল দিয়ে দিলাম ।

 

মেসেজ দিলাম ।

 

বললাম "ফাটাফাটি একটা ছবি দিছো ।"

 

রিপ্লাই সাথে সাথেই এল ।

 

"হুম । আর পাম দেয়া লাগবে না"

 

খুব মজা পেলাম ।

 

এভাবেই ১0-১৫ দিন ফেসবুক এ মেসেজ আদান প্রদান চলল ।

 

একদিন হটাত্ ওর নাম্বার টা চাইলাম ।

 

সে জানতে চাইলো "কেন নাম্বার কেন !"

 

বল্লাম "তোমাকে ডিস্টার্ব করব । তাই"

 

সে হেসে দিল ।

 

নাম্বার দিল ।

 

প্রথমবার এর মত কখা শুনলাম তার ।

 

অবাক হয়ে গেলাম । এত সুন্দর কন্ঠ !

 

আমি খুব ফান করতাম তার সাখে ।

 

আর সে শুধু হাসতো ।

 

ও হাসার সময় শুধু ওর হাসি টাই শুনতাম ।

 

এত সুন্দর করে যে কোন মানুষ হাসতে পারে জানা ছিল না ।

 

আমাদের মধ্যে সারাদিন মেসেজ চ্যাটিং হত ।

 

ও খুব বৃষ্টি পছন্দ করতো ।

 

আর আমি !

 

ওকে বলতাম . . .

 

"বৃষ্টি আবার কারো পছন্দ হয় নাকি !"

 

ও ঐ দিন খুব এক চোট হাসল ।

 

ওর কথাতেই জীবনে প্রথম বার এর মত নিজের ইচ্ছায় বৃষ্টিতে ভিজলাম ।

 

অদ্ভুত অনূভূতি হল ।

 

ওকে ওই দিন ফোন করে বললাম "জানো ? আজকে বৃষ্টিতে ভিজছি ।"

 

সে তো হাসতে হাসতে অবস্থাই খারাপ করে ফেলল ।

 

ওই দিন বলেই ফেললাম "হাসলে তোমাকে খুব সুন্দর লাগে"

 

সে বলল "এই তুমি আমারে দেখছো ? না দেখে কিভাবে বললা ?"

 

আমি বললাম "আমার মনের মাঝে তোমার একটা ছবি আকা আছে ।"

 

সে আবার ও হাসতে থাকল ।

 

আর আমি মুগ্ধ হয়ে শুনলাম ।

 

কতো যে কষ্টের রাত ওর সাথে কথা বলে কাটিয়েছি !

 

কষ্টে থাকলেই ওর সাথে কথা বলতাম । কথা বলা শেষে অবাক হয়ে দেখতাম মন ভাল হয়ে গেছে ।

 

২.

 

২ দিন হল সে ফোন দেয় না । মেসেজ ও দেয় না ।

 

অস্থির লাগতেছে ।

 

ও অবশ্য বলছিল যে ও সিম টা চেন্জ করবে কারন তাকে অনেকে ডিসটার্ব করে ।

 

তাই বলে ৪৮ ঘন্টা !

 

ভীষন অভিমান হল ।

 

সন্ধায় তার ফোন আসলো ।

 

সব রাগ অভিমান তার উপর একসাথে প্রয়োগ করলাম ।

 

সে কষ্ট পেল ।

 

তার চেয়ে বেশি কষ্ট পেলাম আমি ।

 

তাকে সরি বললাম । ওই দিন আর সে কথা বলল না । ভীষন কষ্ট হল ।

 

৩.

 

ছোটবেলা থেকেই আমার মাথা ব্যথা । ইদানিং ওটা বেড়েছে ।

 

অনেক মাথা ব্যথা করলে একসময় নাক মুখ দিয়ে ব্লিডিং হয় । অনেক ডাক্তার

 

দেখাইছি । কিন্তু সবাই বলে প্রবলেমটা মাথা ব্যাথা থেকেই হয় ।

 

একদিন খবর পেলাম অস্ট্রেলিয়া থেকে একজন ডাক্তার এসেছেন । ওনাকে দেখাতে ঢাকা

 

গেলাম । ওর সাথে এই কারনে ২-৩ দিন কথা হল না ।

 

আমার খুব কষ্ট হচ্ছিল ।

 

ডাক্তার আমাকে বলল যে উনি অস্ট্রেলিয়া থেকে আবার কয়েকমাস পর আসবেন । তখন

 

তিনি আমার টেস্টের রেজাল্ট গুলো দিবেন ।ডাক্তার আমার মাথা থেকে বুক

 

পর্যন্ত সিটিস্ক্যান করিয়ে রিপোর্ট টা নিজের সাথে নিয়ে গেল ।

 

এত ঝামেলার জন্য ওর সাথে কথা বলতে পারি নি ।

 

এর আগে কখনো মনে হয়নি । কিন্তু ওই দিন মনে হয়ছিল যে ওকে আমি অনেক অনেক ভালবাসি ।

 

৪.

 

রাতে ওকে ফোন দিলাম ।

 

ভেবেছিলাম ও রেগে যাবে । অবাক হয়ে গেলাম যখন ও বললো "কই ছিলা ? আমার কথা

 

কি মনে পরে নাই ? কি হইছে তোমার ?"

 

আমি ওকে আসল কথাটা বলতে চাই নি । আমি জানি না কিভাবে যেন সে বুঝে ফেলল

 

আমি মিথ্যা বলতেছি ।

 

শেষ পর্যন্ত বলতেই হল ।

 

কথাটা সে হয়তো ভুলে গেল । কিন্তু আমার এই প্রবলেমটা বাড়তেই থাকল ।

 

আমি খেলতে খুব পছন্দ করি । সেটা ও জানে । কিন্তু খেলার সময় আমি ব্যথা

 

পেতাম । আর ও কিভাবে জানি বুঝে ফেলত ।

 

কয়েকদিন খুব বকা দিত । কিন্তু যখন বুঝল আমাকে থামাতে পারবে না । তখন শুধু

 

বলল "প্লীজ লক্ষী । একটু দেখে খেইলো ।"

 

আমি ওর এধরনের কথা শুনে খুব হাসতাম ।

 

ওর সাথে খুব মজা করতাম ।

 

আর ও আমাকে একটা মোহের মধ্যে রাখত ।

 

৫.

 

একদিন রাতে সাহস করে বলেই ফেললাম মনের কথা । মেসেজে বলেছিলাম কারন কল করে

 

বলার মত সাহস ছিল না । অনেকক্ষন পর একটা মেসেজ আসল । যেটার মূল কথাটা ছিল

 

যে সে আমাকে ভাল একজন ফ্রেন্ড হিসেবে পেতে চায় । ওই দিন খুব কষ্ট হইছিল ।

 

বুঝ হবার পর ওই দিন ই প্রথম চোখ দিয়ে অঝোর ধারায় পানি পরেছিলো ।

 

কয়েকদিন কথা বলিনি ওর সাথে । ও প্রতিদিন ই কল করতো আমাকে । সিদ্ধান্ত নিলাম

 

সে আমাকে যেভাবেই চায় সেভাবেই থাকবো । ওর জন্য ভালবাসাটুকু আমার বুকেই

 

জমা থাকুক ।

 

আবার আগের মত হয়ে গেলাম ।

 

আমার সাথে পরিচিত হওয়ার আগে ওর অনেক ফ্রেন্ড ছিল ।

 

কিন্তু আস্তে আস্তে ওর ফ্রেন্ড এর সংখ্যা কমতে থাকল । ও আমার সাথেই সব

 

শেয়ার করতো । আমি নিজেকে আস্তে আস্তে গুটিয়ে নিতে থাকলাম । কারন যখন সে

 

আর একটা ছেলের সাথে এভাবেই কথা বলবে তখন আর আমাকে মনে থাকবে না । তাই

 

নিজের কষ্ট গুলো নিজের ভিতরেই লুকিয়ে রাখতাম ।

 

৬.

 

রোজা এসে গেল ।

 

অস্ট্রেলিয়া থেকে ডাক্তার এল । আমি একাই ডাক্তার এর সাথে দেখা করতে গেলাম ।

 

ডাক্তার আমাকে রিপোর্ট গুলো দেখাতে চাইলো না প্রথমে ।

 

পরে অনেক চাপাচাপির পর আমার হাতে দিল । রিপোর্ট টা পরলাম । ওখানে লেখা

 

ছিল কোন এক অজ্ঞাত কারনে আমার ঘাড়ের কাছে দুটো রগ জরিয়ে গেছে একটা

 

আরেকটার সাথে ।

 

অপারেশন প্রয়োজন । কিন্তু অপারেশন টা খুব রিস্কি । বাচার সম্ভাবনা ৫০-৫০

 

আর অপারেশন টা না করলে আমার জীবন আর বড়জোড় ৫ বছর ।

 

মন ভেঙ্গে গেল ।

 

আব্বা আম্মা কে জানাতে পারলাম না । আব্বা আম্মা এখনো জানেন নাহ । আমার

 

চাচা যেহেতু ডাক্তার শুধু ওনি আর আমার কিছু কাছের বন্ধু কে জানালাম বিষয়

 

টা ।

 

এত রাগ লাগতেছিলো ! ভেবেছিলাম ভাল কোন জায়গায় টিকার পর আমার স্বপ্নের মানুষ

 

টাকে নিজের করে নিবো । তখন সে আর মানা করতে পারবে না । কিন্তু আমার স্বপ্ন

 

শুরুর আগেই শেষ হয়ে গেল ।

 

রাগে দুঃখে মোবাইল , সিম সব ভেঙ্গে ফেললাম । ওর সাথে যোগাযোগ বন্ধ ।

 

কিন্তু ঈদের কিছুদিন আগে আর থাকতে পারলাম না । নতুন একটা সিম থেকে কল

 

দিলাম । সে ফোন ধরে অনেক কথাই বললো ।

 

বললো আমি নাকি ওর সাথে আর কনটাক্ট রাখতে চাই না ।

 

আর সামলাতে পারলাম না । কি হলো কিছুই বুঝলাম না ।

 

ওকে গড়গড় করে সব বলে দিলাম । কিন্তু সে ভাবল হয়তো আমি মজা করতেছি ।

 

আমার পক্ষে সিমটা ২৪ ঘন্টা খোলা রাখা সম্ভব না । আমি সিম টা খুলি শুধু ওর

 

কথা ওর হাসি শোনার জন্য । ওটা দিয়ে শুধু ওকেই ফোন করি আমি ।

 

আজকে সকালে ফোন দিলাম । অনেকবার । ও ধরলো না ।

 

আমি জানি ও প্রবলেম ছাড়া সবসময় ই ফোন রিসিভ করে । কিন্তু আজকে আমার কি হল

 

বুঝলাম না । অনেক উল্টা পাল্টা কথা বলে ফেললাম । ওকে মেসেজ দিয়ে বললাম

 

"আমাকে ভুলেই গেলা ? অবশ্য আর তো মাত্র কয়েকদিন"

 

মেসেজটা সেন্ড করে ফোন অফ করে দিলাম ।

 

বিকালের দিকে খুব খারাপ লাগা শুরু করলো ।

 

মনে হল ওর সাথে কথা বললে হয়তো ভাল লাগবে ।

 

ফোন দিলাম ধরলো না । বুঝলাম রাগ করছে আমার সাথে । সন্ধায় ওকে মেসেজ দিয়ে

 

বললাম "আমার খুব খারাপ লাগতেছে । তোমার সাথে কথা বলার ইচ্ছা ছিল"

 

মেসেজ সেন্ড হল নাকি হল না দেখার টাইম পেলাম না । এর আগেই শুরু হল

 

ব্লিডিং । তারপর আর কিছু মনে নেই ।

 

সেন্স আসল । চাচা আমার পাশে বসা । আম্মা আব্বা বাড়িতে গেছে । একটু পর

 

চাচা চলে গেল । আমার ছোট ভাই আসল একটু পর । এসে ফোন টা দিয়ে বলল আমার ফোন

 

 

আমি তখন ও পুরোপুরি ঠিক না । ও যে কল দিছে বুঝতে টাইম লাগল ।

 

ও জানতে চাইল যে আমার কি হইছে ।

 

বললাম কিছু না । ও কেদে ফেলল । অবাক হলাম । ওর কান্না কখনো শুনি নি । ধক

 

করে উঠলো বুক টা । অনেক কষ্টে ওকে শান্ত করে ফোন কাটলাম ।

 

কারেন্ট চলে গেল । অন্ধকারে শুয়ে শুয়ে ভাবতে থাকলাম "কেন কাদল সে ? তাহলে

 

কি সে আমাকে পছন্দ করে ?

 

নাকি শুধুই Sympathi ?"

 

যাই হোক । অনেক দেরি হয়ে গেছে ।

 

গান শুনতেছিলাম একটা . . .

 

গানের কথাগুলো আমার মনের কথার সাথে মিলে গেল . .

 

" হাসতে গেলে এখন আমার চোখে আসে পানি ,

 

কখন জানি হটাত্ আবার চোখের রক্ত ঝরে ,

 

সৃষ্টি হবে অন্য রকম একটি গল্প আজ ,

 

আলোর নিচে সাজবো আমি অন্ধকারের সাজ ।

 

দেখো আবার আসে না যেন তোমার চোখে পানি ,

 

হটাত্ করে দেখবে তুমি হারিয়ে গেছি আমি ।"

 

(আমার হাতে সময় আসলেই খুব কম । তার পর ও আমি বাচতে চাই । জানি না সে

 

আমাকে ভালবাসে কিনা । কিন্তু আমি তার স্মৃতি নিয়েই থাকতে চাই ।


 
  There have been 20233 visitors (42449 hits) on this page! © All right received  
 
oloukik.page.tl
Click here to visit us on facebook
This website was created for free with Own-Free-Website.com. Would you also like to have your own website?
Sign up for free